যুদ্ধপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেলদের বিরুদ্ধে জার্মানিতে মামলা করা হয়েছে। জার্মানির কার্লসুরুহে শহরে অবস্থিত দেশটির সুপ্রিম কোর্টে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মামলাটি করা হয়। এতে বৈশ্বিক ও সার্বজনীন আইনগত এখতিয়ারের অধীনে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ফোর্টিফাই রাইটস এবং জার্মানিতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা স¤প্রদায়ের লোকজন ও মিয়ানমার থেকে নির্বাসিত একদল ব্যক্তি মামলাটি করেছেন। এতে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। মামলায় উঠে এসেছে ২০২১ সালে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের বিষয়টি।

মামলাটি করতে সহযোগিতা করেছে ‘ফর্টিফাই রাইটস’ নামে জার্মানির একটি মানবাধিকার সংগঠন। তাদের একটি সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের মধ্যে ৬ জন নারী ও ১০ জন পুরুষ রয়েছেন। তাঁরা সবাই সামরিক জান্তার অপরাধ ও নির্মমতার সাক্ষী। তাঁরা মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু এবং মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ।

এ বিষয়ে ফর্টিফাই রাইটসের নির্বাহী পরিচালক ম্যাথিউ স্মিথ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মনোযোগ সত্তে¡ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখনো পূর্ণ দায়মুক্তি উপভোগ করছে। এর বিহিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসা করতে হবে।

জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডের স্পিগেল ও এফেংঙ্গলিস প্রেস সার্ভিস এই মামলার খবর প্রকাশ করে জানিয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক জান্তা আগামী সপ্তাহে তাদের অভ্যুত্থানের দ্বিতীয় বার্ষিকী পালন করবে। এই জান্তা দেশটিতে তাদের বিরোধীদের শক্ত হাতে দমন করছে। বিরোধীদের ওপর হামলা ও কঠোর নির্যাতনের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অং সান সু চি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। এর পর থেকে মিয়ানমারের নির্বাচিত এই নেত্রী সামরিক বাহিনীর হেফাজতে আছেন। একই সঙ্গে দেশটিতে চলছে জান্তা সরকারের বিরোধীদের ওপর চরম দমন-পীড়ন।

এর আগে ২০১৭ সালের আগস্টের শেষের দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ব্যাপক দমন-নিপীড়ন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এর জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।